এই ব্লগটি সন্ধান করুন

৩১ মে, ২০১৫


ভন্ড ও ভন্ডমী
                - মো: জাহাঙ্গীর. আলম
কুকুরও এখন মধ্য রাতে
শেয়ালের মত হুকা হুয়া ডাকে
খেয়ে নেয়, মুনিবের মাল চুপি সারে
ভোর বেলা যথেস্ট পরিমান ঘেও ঘেও করে
 মৃনিবকে বুঝায়,  মুনিব খমা করেন
যথা সাধ্য চেস্টা করেছি

১৪ মে, ২০১৫

কষ্টে ভরা জীবন আমার
দুঃখে ভরা মন,
মনে সাথে যুদ্ধ করে আছি
সারাক্ষন,
তারার সাথে থাকি আমি চাঁদে
পাশাপাশি,
আজব একটা ছেলে আমি দুঃখ
পেলেও হাসি।

অপেক্ষায়


কবি,
বলেছিলে রাই কিশোরীর আঁচলের গিটে
জোছনা বেঁধে দিবে
বেসামাল চক্ষু নদীর জলে
দু’ ফোটা ভালবাসা মিশিয়ে দিবে।
বলেছিলে,
মরা মাধবী লতার জীবন ছেড়ে
ডালিম ফুলের মতো টুকটুকে
আরো একটি কবিতা দিবে।
বলেছিলে,
একটি রাতের শরীর ছুঁয়ে
এক পাশে তুমি,
অন্য পাশের ক্ষত বিক্ষত চাঁদ সরিয়ে
আমার ঝাপসা চোখের পাতায়
কিংবা মৃত শহরের বুকে


২৮ এপ্রি, ২০১৫

কোথায় তুমি মা


কত আগুন জ্বলছে আমার এ বুকে , চোখের পানিতে ভেসে যায় হৃদয় ভাংগা দুঃখে ছোট বেলায় কত আনন্দে খেলা করেছি , মায়ের কোলে মাথা রেখে সব বেদনা ভুলেছি । সে কথা মনে উঠলে অন্তর ফেটে যায় , রোদে ,ঝড় বৃষ্টি লাখতে দেয়নি 'মা' গায় । কখনো মাকে ফেলে দুরে চলে গেলে দরজায় দাড়িয়ে মা তুমি ভেসেছ চোখের জলে , মা গো আমার চোখের পানি এখন ডাকছি তোমায় আমায় ফেলে তুমি রয়েছ কোথায়
c

২৫ এপ্রি, ২০১৫


 আমি
*******************
আমি জানালা খুলে রাখি, ভোরে কিংবা বিকেলের শেষে
আশায় থাকি শিল্পীর ঘোলাটে রঙের মতো একটি ছায়া পড়বে কখনো
জানালার ওপ্রান্তে বাতাসে দোলা শাড়ির আঁচল আসবে
বৃষ্টিভেজা একটা খোঁপা দেখবো
একটি ছায়া শুধু আমার জন্য উষ্ণ হবে বলে আমি জানলাটা খুলে রাখি,

অন্ধকারের খন্ড শিহরণ ছাঁপিয়েও আমি চোখ খুলি না
তুমি কেমন করে ফুল ফোঁটাও, কেমন করে তাকাও
কি অযতনে আমার শরীরে তুমি গন্ধ রেখে যাও
অনেক সাহস করেও আমি তোমায় ছুঁতে পারি না
শুধু সাহস করে, আমি খুলে রাখি জানালাটা

আমার সর্বস্ব দিয়ে আমি জানালাটা খুলে রাখি,
ভাবি, তুমি এসেছিলে, ভাবি তুমি আবার আসবে
জাগরণে নয়, নিদ্রায় নয়, সস্তা কোন ঘোরে নয়,
আমার সমস্ত কিছু এলোমেলো করতে তুমি আসব্‌
আমি লুটপাট হবার অপেক্ষায় জানালা খুলে রাখি...
অপেক্ষায় থাকি, কখন তুমি চলে যাবে আর কখন আমি কাঁদবো

      কাঁদবো
===========================
আমিও কাঁদবো একদিন
এই আকাশ,এই মেঘ
যতই কান্নার ভান করে বর্ষা আনুক,
এর চে’ ঢেরগুণ বেশি কাঁদবো।
কখনো, কোন এক মহুর্তে কাঁদতেই হবে
কাঁদবার সাধ যে প্রকটতর আমার,
মেঘের কিনারে মোম গলা বৃষ্টি
চোখ কচলা কচলাতে নেমে আসুক তৃণ ভূমে,
এর চে’ঢেরগুণ বেশি কাঁদবো।
জলবায়ুর বিবর্তনে
প্যাকেটের ভেতরে ক্ষয়ে যাওয়া
ন্যাপথলিনের মতন
আমিও অবশিষ্ট থাকবোনা,
পাথরের ক্ষীণ হতে হতে বিদীর্ণ হবার মতনই
ঠিকঠাক আমিও চৌচির হবো,
তখন প্রকারান্তরে কেঁদে যাবে আমার নিদান চোখ।
হাঁসির ঠোঁটে অমাবস্যা আসবে,
অথবা বোশেখের তান্ডব আসবে,
খাওয়া,নাওয়ার সময় থাকবেনা গোছগাছ মতন,
এভাবেও যদি না পারো কাঁদাবার,
তবে এক মুঠো চোরা অাঘাত দিয়ে দিও,
আমি কাঁদবোই কাঁদবো।
 Image result for কাঁদবো


খুঁজে ফেরা


         অভিশাপ দিবো না দিবো না কোন অপবাদ
বলবো শুধু বলে যাও কি ছিল অপরাধ  
          শরতের সকালে যেদিন দেখেছি প্রথম
ভাবিনি কখনো তোমার হব আমি এ অধম
           পরা ছিল লাল শাড়ি খোঁপায় রক্তজবা
সোনালি সকাল শুভ্র আকাশ
             প্রিয়তমা তোমাতে আমার প্রথম হারিয়ে যাওয়া
আজ শুধু অতীত খুঁজে ফেরা

১৩ এপ্রি, ২০১৫

আসুন বরণ করে নেই ১৪২২ বঙ্গাব্দকে। অবশ্যই তা যেন হয় নিজস্ব সংস্কৃতিকে ঠিক রেখে এবং সুস্থ সাংস্কৃতিক ধারা বজায় রেখে।
শুভহোক ১৪২২ বঙ্গাব্দ। শুভ নব্বর্ষ।

৫ এপ্রি, ২০১৫

বৈশাখ

ড়রমণীর নকশা গালে
পথের পাশে আলে আলে
বৈশাখ আসে সোরগোলে।
যুবকের পাঞ্জাবি গলে
নারু মোয়া ছাতু গিলে
বৈশাখ আসে মিষ্টির দোকানে।
গানে গানে প্রানে প্রানে
ঢাকের তালে সুর তুলে
বৈশাখ আসে রমনার বটমূলে।
শিশু কিশোরের ঊচ্ছ্বাসে
মায়ের ব্যস্ততায় সাড়া দিয়ে
বৈশাখ আসে পাজনের কড়াই শুন্য করে।
অগ্নিমূর্তি সূর্য নিয়ে
কাঁচা আমের সুবাস মেখে
বৈশাখ আসে বিহুফুলের শাখে শাখে।
প্রতি ঘরে চৌখাটে
তকতকে আসবাবে
বৈশাখ আসে নিম-ফুল মালা গলে।
নব হালখাতার নব আয়োজনে
নতুনের শুভ উদ্বোধনে
বৈশাখ আসে অতীতের ক্লান্তি ভুলে।
আসে বৈশাখ রুদ্র ঝড়ে
কালবৈশাখী মাথায় করে
যেন পুরাতন ধুয়ে দিবে নিজ করে
এই প্রত্যয় পন করে
বৈশাখ আসে উঠোনে
শিশুর আঁকা প্রতীকী শত্রু দমনে।

এলো এলো রে বৈশাখী ঝড় এলো এলো রে


 ------------------------- কাজী নজরূল ইসলামের
এলো এলো রে বৈশাখী ঝড় এলো এলো রে,
ঐ বৈশাখী ঝড় এলো এলো মহীয়ান সুন্দর।
পাংশু মলিন ভীত কাঁপে অম্বর চরাচর থরথর।।
ঘনবনকুন্তলা বসুমতী সভয়ে করে প্রণতি,
সভয়ে নত চরণে ভীতা বসুমতী।
সাগর তরঙ্গ মাঝে তারি মঞ্জীর যেন বাজে বাজে রে
পায়ে গিরিনির্ঝরঝরঝর ঝরঝর।।
ধূলিগৈরিক নিশান দোলে ঈশান গগন চুম্বী,
ডম্বরু ঝল্লরী ঝাঁঝর ঝনঝন বাজে
এলো ছন্দ বন্ধনহারা এলো রে
এলো মরুসঞ্চর বিজয়ী বীরবর।।
 

  এসেছ হে বৈশাখ



বৈশাখী রোদে আবার বেজেছে রঙিন কাঁচের চূড়ি
দখিনা বাতাসে আজ ওড়াবো আমার মন ঘুড়ি ৷
বাসন্তী রঙ শাড়ির ভীরে আজ আবার হারাবো
কৃষ্ণচূড়ার লাল আগুনে মন আবার পোড়াব ৷
আজ নাচবো আজ গাইবো আজ মাতবো প্রাণ খুলে
আজ নাচাবো আজ গাওয়াবো আজ মাতাবো সব ভুলে ৷
আজ অনেক দিনের পরে হবে আবার সমর্পন
মন ঘুড়িটায় থাকবে ভরে লাজুক শিহরণ ৷
আজ মন বাঁশরীর সুরে সুরে ভুবন মাতাবো
যাদুর কাঁঠির ছোঁয়ায় আজ তোমায় জাগাবো ৷
তুমি হাসবে তুমি ফাঁসবে তুমি আমায় জড়াবে
তুমি দুষ্টু চোখের চাহনীতে আমায় ভরাবে ৷
আজ বৈশাখের রঙের মেলায় আমার নিমন্ত্রণ
আজ ধন্য বড় ধন্য আমার ক্ষুদ্র তুচ্ছ জীবন ৷



(সবাইকে বৈশাখী শুভেচ্ছা)

১ এপ্রি, ২০১৫

বৃষ্টি

ঝুম বৃষ্টি হইতাছে !!
ঝুম বৃষ্টি আমার অনেক প্রিয় ...কার কার ভালো লাগে এই ঝুম বৃষ্টি !!
ভিজতে অনেক ইচ্ছা করছে কিন্তু একটু আগে গোসল করলাম তাছাড়া ছাডে উঠা যায় না আমাদের বাড়ি তে, রাস্তায় নেমে ভিজা সম্ভব না !! মন খারাপ !! তাই জানালার ফাক দিয়া বৃষ্টি দেখি !! কি আফসুস যে হইতাছে !! ঢাকা শহরে নিজেদের বাড়ি না থাকলে কিছুতেই মজা নাই !! চাবি বাড়িওল্লার মেয়ের কাছে , এই রাত ৯ টায় চাবি চাওয়ার মতো আদিক্ষেতা আমার নাই , কিন্তু আবার মন খারাপও লাগছে অনেক !! অনেক দিন বৃষ্টি ভিজা হয়ে উঠে না , বাইরে থাকলে কাগজ পাতি মোবাইল ইটিসি এর জন্য ভিজা হয় না আর বাড়িতে থাকলে ছাডের উঠতে পারি না বলে শুধু চোখের কোনে জাপ্সা জানালার ফাকেঁ আর হাত দুটো গ্রিলের বাইরে দিয়ে তোমায় ছুতেঁ বাড়িয়ে দেই আমার হাত !!
বৃষ্টি আমার ভিষন প্রিয় , কারন কি তুমি? জানি না তো ? তোমার ও বৃষ্টি প্রিয় ছিল বলেই কি আমি আমার প্রিয় এর তালিকায় অন্তভুক্ত করেছি ? কি জানি !! তবে এখন তুমি নেই আমার ভুবনে , তোমার প্রিয় কোন কিছু দেখলেই তোমার ছবি চোখের কোনে ভেসে উঠে ...বৃষ্টির সাথে সাথে মনে হয় আমার মনেও কিছু মেঘ জমেছে !! কে জানে হয়তো জেড়ে ফেলে দিতে চেয়েছে বারবার কিন্তু এই মেঘের সম্মহিত ক্ষমতা অনেক বারবার জমা হয় !!

৩১ মার্চ, ২০১৫


এপ্রিল ফুল: আর কতকাল আত্মবিস্মৃত থাকব?



বিদেশী সংস্কৃতি নামের বস্তুত অপসংস্কৃতি আমাদের দেহের প্রতিটি রক্ত কণিকায় এমনভাবে মিশেছে, যেন দিনে দিনে আমরা বিচার-বুদ্ধিহীন অথর্ব জাতিতে পরিনত হচ্ছি । মুসলমানদেরকে হত্যার দিনে মুসলমারাই উৎসব পালন করে ! এ যেন মায়ের মৃত্যু বার্ষিকিতে সন্তানের জন্মদিন পালন । বছরের ৩৬৫ দিনেই কোন না কোন বিশেষ এক বা একাধিক দিবস রয়েছে । আমরা অনাড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে সে সকল দিবসকে উদযাপন করি । বছরের এমন কিছু বিশেষ দিবস আছে, যেগুলো পালন করলে আত্মতৃপ্তি আসে, ধর্ম, সমাজ, রাষ্ট্রের প্রতি মানুষের দায়বদ্ধতা বাড়ে । আবার এমন কতগুলো দিবস আছে যেগুলো পালন করলে নিজেদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সভ্যতার সাথে গাদ্দারী করা হয় । স্পেনের মুসলমানদের এমনি এক মর্মান্তিক ট্রাজেডী পূর্ণ দিবস ১৪৯২ সালের ১লা এপ্রিল । বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেকগুলো মুসলিম অধ্যুষিত দেশের মুসলমানরা এ দিনকে ‘এপ্রিল ফুল’ বা ‘এপ্রিলের বোকা’ দিবস হিসেবে পালন করে । অন্ধ অনুকরণ ও ইতিহাস বিষয়ে অজ্ঞ থাকার কারণে মুসলমানরা এ দিনটিকেও একটি খুশির দিন, অন্যকে ধোঁকা দেয়ার দিন হিসেবে উদযাপন করে অথচ এ দিনে বিশ্বের সকল মুসলমানগণকে স্পেনের মুসলমানদের উপর চালানো সেদিনের নির্মম হত্যা যজ্ঞকে স্মরণ করে বেদনাবিদিত হয়ে অশ্রুপাত করা উচিত । মুসলমানরা তাদের ইতিহাস সম্পর্কে এমনভাবে অজ্ঞ হয়েছে যার কারণে, তাদের ভাইদের প্রতি ইহুদী-নাসারা ও খ্রিষ্টনরা যে অমানুষিক, অবর্ণনীয় নির্মম আচরণ করেছিল তাও ভূলে বসে আছে । এমনকি মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর শ্বাশতবানী বিমূখ হয়ে আজ মুসলমানরা ইসলামের প্রকৃত আদর্শ থেকে বিচ্যুৎ হয়ে চরম লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতনের শিকার । আজ থেকে ৫২২ বছর পূর্বে ইউরোপের স্পেনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইসলামের শত্রুকৃত আচরণ ভূলে আজ মুসলামনদের মধ্যে প্রবেশ ঘটেছে এমন এক সংস্কৃতি উদযাপনের যা প্রকৃত মুসলমানদের জীবন ও রক্ত নিয়ে হলি খেলার স্বাক্ষ্য বহন করে ।
মানবতা যখন পৃথিবীর দ্বারে দ্বারে ঘুরে এ ধরা থেকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে তখন আল্লাহ তা’য়াল মানবতার রক্ষাকর্তা করে পাঠিয়েছিলেন তার প্রিয় বন্ধু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে । তিনি পৃথিবীতে আগমন করে নবুয়তের দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়ে, মানুষের করুণ অবস্থা দেখে তাদেরকে সঠিক পথ অনুসরণের আহ্বান জানান । শুরু হয় ইসলামের দাওয়াতী কার্যক্রম । ইসলামের এ সুমহান বার্তা কালের আবহে আরবের গন্ডি পেরিয়ে পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে । একের পর এক মহাদেশ, দেশ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিতে শুরু করে । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর চেষ্টা এবং তার সহচরদের ঐকান্তিক সহযোগীতায় অতি সামান্য সময়ের মধ্যেই ইসলাম পৃথিবীতে এক সুসংবদ্ধ স্থান দখল করে নেয় । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর তিরোধানের পর ইসলামের সম্প্রসারণ আরও ব্যাপৃত হয় । এতদিন যে ইসলাম শুধু আরব এবং আশেপাশের বিস্তৃত মরুভূমি অঞ্চলে ঝান্ডা উড্ডীয়ন করেছিল, সময়ের আবর্তে ইসলামের সে সুবাতাস প্রশস্ত ভূমধ্যসাগরের উত্তল তরঙ্গমালা পাড়ি দিয়ে ইউরোপের বুকে স্থায়ী ঠিকানা করে নেয় । মুসলিম বীর সেনানী তারিক বিন যিয়াদের নেতৃত্বে মুসলমানরা দখল করে নেয় ইউরোপের স্পেনসহ আসে পাশের বিস্তৃত এলাকা । এ ভূমে সুদীর্ঘকাল আপন মহিমায় উড়তে থাকে ইসলামের পতাকা । ইউরোপের বিলাসী জীবনের হাতছানিতে স্পেনের মুসলিম শাসকেরাও ইসলামের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয় । শাসকদের আদর্শ বিচ্যুতির ফলাফল হয়েছিল লাখো জীবন বিনাশের কারণ । অবশেষে সোনালী শাসনের অধ্যায় পেড়িয়ে মুসলমানদের নৈতিক অধঃপতনের ফলে সৃষ্টি হয় শোকাবহ এপ্রিলের ঘটনা । অথচ বর্তমান সময়ের মুসলমানরা আত্মবিস্মৃত হয়ে সেই শোকাবহ দিনটিকে আনন্দের উপলক্ষ্য করে পালন করছে । কি বেহায়া-নির্লজ্জ আমরা ! মুসলমানদের জন্য এপ্রিলের ভয়াবহ ট্রাজেডির ইতিহাস অনেক দীর্ঘ । আসুন এপ্রিল ফুলের উৎপত্তির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস সংক্ষেপে জেনে নিতে চেষ্টা করি-
বর্তমান ইউরোপের মত ৭ম শতাব্দীর ইউরোপ বিশ্বের নেতৃত্বে ছিল না । দাসত্ব প্রথা থেকে শুরু করে শাসকদের অমানুষিক নির্যাতনের মধ্যেই কাটত ইউরোপীয়ানদের জীবন । অন্ধকার জগতের সকল অপকর্মে ইউরোপের বিশেষ করে স্পেনের শহর-নগর ছিল মাতোয়ারা । ইউরোপীয়ানদের এমনি দুঃসময়ে মুসলমানদের ঝান্ডাবাহী অদম্য সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ মাত্র ১২ হাজার সৈন্য নিয়ে ভূমধ্যসাগরের উত্তাল তড়ঙ্গমালা পাড়ি দিয়ে জিব্রাল্টার প্রণালীতে উপস্থিত হন ৭১১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসের শেষ দিকে । তৎকালীন সময়ের আইবেরিয়ান ও পেনিনসুলা (যার বর্তমান নাম স্পেন ও পর্তুগাল) যেটাকে আরবরা বলত আন্দালুস । তারিক বিন যিয়াদের নেতৃত্বে মুসলিমবাহিনী প্রথমে আন্দালুস আক্রমন করেন । তৎকালীন সময়ে এ অঞ্চলের শাসক ছিলেন অত্যাচারী রডারিক । তার আচরনে এ অঞ্চলের প্রজারা তার উপর প্রচন্ড নাখোশ ছিল । এ অঞ্চলের অধিবাসীরা প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করত, যাতে তারা রডারিকের অত্যাচার থেকে মুক্তি পায় । তারিক বিন যিয়াদের আগমন আন্দালুস জনপদের লোকেরা তাদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে মনে করত । তাইতো ঐতিহাসিক রবার্ট ব্রিফল্ট তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘দ্যা ম্যাকিং অব হিউম্যানিটি’তে মুসলমানদের এ প্রবেশকে অন্ধকার কক্ষের দরজা দিয়ে সূর্যের আলোর প্রবেশ বলে অভিহিত করেন’ । আরবদের সামরিক শক্তি এবং সমর কৌশলের খ্যাতি ছিল বিশ্বব্যাপী সমাদৃত । সম্মূখ যুদ্ধে আরবের বীর মুজাহিদরা ছিল বিশ্বের অদ্বিতীয় । মুসলমানদের সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ এবং তার সৈন্যবাহিনী ছিল ঈমানী শক্তিবলে বলীয়ান । কথিত আছে হযরত তারিক বিন যিয়াদ এবং তার সঙ্গীরা যে জাহাজগুলোতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের প্রবেশদ্বারে পৌঁছেছিল সে জাহাজগুলোকে তারা ইউরোপে পৌঁছেই পুড়িয়ে ফেলে । মুসলিম বাহিনীর এ ঘটনাই তাদের অদম্য স্পৃহা এবং কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছার দৃঢ়তার জানান দেয় । ৭১১ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার মুসলিম বাহীনির সাথে রাজা রডারিকের বাহিনীর ব্যাপক যুদ্ধ হয় এবং রডারিকের বাহিনী মুসলিম সৈন্যদের কাছে মারাত্মকভাবে পরাস্ত হয় । খ্রিষ্টানদের শাসক রডারিক পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলডেল কুইভারের পানিতে ডুবে মারা যায় । রডারিকের মৃত্যুর মাধ্যমে মুসলমানদের বিজয় নিশ্চিত হয় । মুসলমানরা ইউরোপের কেন্দ্রভূমি মালাগা, গ্রানাডা, আল হামারা, সেভিজা, তালেদো ও কার্ডোভাসহ অনেক অঞ্চলের জিম্মাদারী পায় । এরপর দীর্ঘদিন মুসলমানদের বিজয় ত্বরান্বিত হতে থাকে । একের পর এক অঞ্চল মুসলমানদের অধিকারভূক্ত হয় । সুদীর্ঘ ৮০০ বছর মুসলমানরা ইউরোপের স্পেনসহ বিভিন্ন অঞ্চল অত্যন্ত সুনামের সাথে শাসন করেন । মুসলমানদের শাসনামলে জ্ঞান-বিজ্ঞান, অর্থনীতি, সমরনীতিতে স্পেন বিশ্বের নেতৃত্বে চলে আসে ।
ইতিহাস বড়ই নির্মম । ইতিহাসে একটি মজার ব্যাপার লক্ষ্য করা যায় । ইতিহাসে কোন সভ্যতাই তিনশ বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি । তবে এ সময়ের ব্যাপ্তি কিছুটা কম বেশি হতে পারে । চিনের মিং বংশ থেকে শুরু করে গ্রিক, রোমান, মেসেপটেমিয়ান এমনকি মোঘল সম্রাজ্যের একই অবস্থা । সাফল্যের শিখরে থাকতে থাকতে তার মধ্যে বোধ হয় এক ধরনের স্থুলতার জন্ম নেয় । শুরু হয় পতনের পালা । ইউরোপে মুসলমানদের অবস্থাও তার ব্যতিক্রম হয়নি । ইউরোপে মুসলমানদের শাসন দীর্ঘ আটশবছর স্থায়ী হলেও মুসলমানদের সোনালী শাসন হিসেবে মাত্র ৩২২ বছরকে উল্লেখ করা যায় । এরপর শুরু হয় অধঃপতন । মুসলমান শাসকদের দুনিয়াপ্রীতি, বিলাসবহুলতা, অনৈতিকতা, নারী লিপ্সা তাদেরকে ইসলামের গন্ডি থেকে বহুদুরে আছড়ে ফেলে । দশম শতাব্দীর মাঝামাঝিতে ইহুদী, নাসার এবং খ্রিষ্টনরা এতদিন মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমনের যে সুযোগ তালাশ করতেছিল সে সুযোগের নাগাল পায় । খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের বেশ-ভূষা ধারন করে, ইসলাম ধর্মের শিক্ষা গ্রহন করে মসজিদের ইমাম হয় এবং সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াতে থাকে । খ্রিষ্টনরা মুসলিম শাসকদেরকে নারী এবং ধণের মাধ্যমে বশীভূত করতে থাকে । চৌদ্দ শতাব্দীতে এসে প্রচন্ড মুসলিম বিদ্বেষী পঞ্চম ফার্দিনান্দ অব এরগান এবং পর্তুগীজ রানী ইসাবেল অব ক্যাষ্টেল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় । ইসলামের এ দুই শত্রু মিলে মুসলমানদেরকে ধ্বংস করার চরম ছক রচনা করে । রানী ইসাবেলা এবং ফার্দিনান্দের বাহীনিকে একত্র করে তাদেরকে আদেশ দেয়া হয়, মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলের শষ্যক্ষেত জ্বালিয়ে দেয়ার, নগর ধ্বংস করার । শাসকের হুকুম পেয়ে খ্রিষ্টান সৈন্যবাহীনি বীর দর্পে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সামনে অগ্রসর হতে থাকে । তারা ১৪৬৯ সালে বিযাহ এবং ১৪৮৩ সালে মালাগা দখল করে নেয় । এমনকি শহরের প্রধান খাদ্য সরবরাহকেন্দ্র ভেগা উপত্যকাকেও ধ্বংস করে দেয় । তৎকালীন সময়ে গ্রানাডা এবং কার্ডোভার শাসনভার ছিল আবুল হাসানের উপর । ইসলামের ঝান্ডা রক্ষায় তিনি নির্ভীক ছিলেন তবে তার কু-পুত্র আবু আব্দুল্লাহর ষড়যন্ত্রে তিনি সিংহাসন ছাড়া হন । আবু আব্দুল্লাহর সিংহাসনও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি । ফার্দিনান্দ এবং ইসাবেলা বাহিনী তার সম্রাজ্যের দিকে আক্রমন চালালে আব্দুল্লাহ প্রাণ বাঁচাতে খ্রিষ্টানদের সাথে সন্ধি করেন । তবে আব্দুল্লাহর সেনাপতি ইসলামের বীর সেনানি মুসা ইসলামের শত্রুদের সাথে সন্ধি করার চেয়ে তলোয়াড়ের মাধ্যমে মৃত্যুকে বেশি সম্মানের মনে করেন এবং আমরণ ইসলামের রাস্তায় জেহাদ করে যান । সময়ের আবর্তে ইসলামের পরাজয় ঘণীভূত হয় । স্পেনের সর্বত্র খাঁদ্য ঘাঁটতি দেখা দেয় । স্পেনের শিশু-কিশোর-মহিলাদের জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ে । এই সুযোগে ভূখা স্পেনের মুসলমানদের শক্তিহীনতাকে কাজে লাগিয়ে ফার্দিনান্দ ও ইসাবেলা এবং তাদের বাহীনি স্পেনকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে । অবশেষে মুসলমানরা নিরুপায় হয়ে পড়ে । ইতোঃমধ্যে ফার্দিনান্দ ঘোষণা করে, ‘যে সব মুসলমানরা নিরস্ত্র হয়ে গ্রানাডার মসজিদগুলোতে আশ্রয় নেবে তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে আর যারা খ্রিষ্টানদের জাহাজগুলোতে আশ্রয় নেবে তাদের অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেয়া হবে । অন্যথায় আমাদের হাতে তোমাদের প্রাণ হারাতে হবে’।
মুসলমানরা একদিকে যেমন নিরুপায় ছিল অন্যদিকে সরলমনে খ্রিষ্টানদের প্রতিশ্রুতিকে বিশ্বাস করেছিল । কেননা স্পেনে এতদিন মুসলমানদের শাসন চললেও খ্রিষ্টানদের কোন অধিকারকে খর্ব করা হয়নি । এমনকি অনেক ক্ষেত্রে মুসলমানদের চেয়ে খ্রিষ্টনরা বেশি অধিকার ভোগ করেছে । অথচ খ্রিষ্টনরা মুসলমানদের দুঃসময়ে ঠিক উল্টা আচরণ শুরু করেছে । মুসলমানরা গ্রানাডার মসজিদ এবং খ্রিষ্টানদের জাহাজগুলোতে আশ্রয় নিল । ফার্দিনান্দ এবং ইসাবেলার নির্দেশে মসজিদগুলোতে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করা হল এবং জাহাজগুলোকে গভীর সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া হল । এরপর শুরু হল খ্রিষ্টানদের বিভৎস আনন্দ উৎসব । মুসলমানরা যে সকল মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিল সে সকল মসজিদে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল এবং আশ্রয় নেওয়া জাহাজগুলোকে পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হল । সেদিন মুসলিম শিশু, কিশোর, তরুন-তরুনী, যুবক-যুবতী , নারী এবং পুরুষের মৃত্যুযন্ত্রনার চিৎকারে গোটা ইউরোপের আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল আর তখন দাঁত কেলিয়ে বিভৎস হাসি দিয়ে ইসাবেলা বলেছিল, ‘হায়, এপ্রিলের বোকা ! শত্রুর আশ্বাস কেউ বিশ্বাস করে’ ? ইতিহাসের এ মর্মান্তিক দিনটি ছিল ১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১লা এপ্রিল মোতাবেক ৮৯৭ হিজরীর ১২ই রবিউল আউয়াল । এ দিনের ঘটনায় ৭ লাখের অধিক মুসলিমকে খ্রিষ্টনরা হত্যা করেছিল । ইতিহাসের এ ঘটনাকে উপলক্ষ্য করেই বিশ্বব্যাপী খ্রিষ্টনরা প্রতিবছর এপ্রিলের প্রথমদিন ‘এপ্রিল ফুলস ডে’ বা All fools day (বিশ্ব বোকা দিবস) পালন করে । এ দিনটির উৎপত্তি নিয়ে ইতিহাসে আরেকটি ঘটনা উল্লেখ আছে । সেটি হচ্ছে-
উনবিংশ শতাব্দীর ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের বর্ণনায় পাওয়া যায়, পয়েলা এপ্রিল হল সেই তারিখ যেদিন পারস্যবাসী ও ইহুদিদের পক্ষ থেকে হযরত ঈসা (আঃ) কে ঠাট্টা-বিদ্রুপের টার্গেট বানানো হয়েছিল । ইঞ্জিলের মধ্যে (বর্তমানে যা বাইবেল) ঘটনাটি বর্ণিত আছে, ‘আর সে ব্যক্তি ঈসা (আঃ) কে বন্দী করে তার সাথে ঠাট্টা পরিহাস করত এবং তাকে আঘাত করত, তার চোখ বেঁধে তার গালে চড় থাপ্পর মারত এবং তাকে এই বলে জিজ্ঞাসা করতো, নবুয়তের মাধ্যমে বলো, কে তোমাকে মারছে ? এভাবে ভৎসনা করে আরো অনেক কথা তার বিরুদ্ধে বলা হয় (লুক ২২: ৬৩-৬৫) । তবে এ ঘটনা উদ্ধৃতির সূত্র দূর্বল । ১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দের পহেলা এপ্রিলে খ্রিষ্টানরা যে অমানুষিক ঘটনা ঘটিয়েছিল সে ঘটনার পুনরাবৃত্তি আবারও ইসলাম বিদ্ধেষীরা ঘটাতে চায় । তাইতো ১৯৯৩ সালের পহেলা এপ্রিল গ্রানাডা ট্রাজেডীর ৫০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে স্পেনে এক অনাড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘হলি মেরি ফান্ড’ গঠন করে । খ্রিষ্টানরা আবারো ষড়যন্ত্রে মেতেছে । তারা বিশ্বের যে সকল দেশে মুসলিমদের অধিপত্য আছে সে সকল দেশকে ধ্বংস করতে চায় এবং যে সকল দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু সংখ্যক মুসলমান আছে তাদেরকে নির্যাতন এবং হত্যা করছে । খ্রিষ্টানদের মিশনের সে ধারাবাহিকতায় খ্রিষ্টনা-নাসারা ও ইহুদীরা এক হয়ে ঠুনকো অজুহাতে আফগানিস্তান, ইরাক, ফিলিস্তিন, মিশর, লিবিয়া, বসনিয়া, সিরিয়া, পাকিস্তানসহ অনেকগুলো রাষ্ট্রকে কারর‌্য্যত ধ্বংস করে দিয়েছে এবং মুসলমানদেরকে তাদের তাঁবেদারীর গোলামে পরিনত করেছে ।
বিখ্যাত দার্শনিক জর্জ বার্নাড’শ বলেছিলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা ইতিহাস থেকে মানুষ শিক্ষা গ্রহন করে না’ । আমরা কি দার্শনিক বার্নাড’শ এর মতের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সামনে এগুচ্ছি ? যে মুসলমানদের হত্যা করে খ্রিষ্টানরা এপ্রিল ফুলের জন্ম দিল, জীবন উৎসর্গকারী সেই মুসলমানদের উত্তরসূরী হয়ে আমরা এপ্রিল ফুল অনুষ্ঠান পালন করছি, একজন আরেকজনকে বোঁকা বানাচ্ছি, শুভেচ্ছা বিনিময় করছি । ধিক্কার আমাদের এমন কর্মকান্ডের ওপর ! ধিক্কার আমাদের এমন হীন চিন্তা-চেতনার উপর !! যেদিনটিকে গভীর ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ১৪৯৩ সালের গ্রানাডা ট্রাজেডীসহ গোটা বিশ্বের নির্যাতিত নিপীড়িত মুসলমানদের কল্যান কামনা করে উদযাপন করা উচিত সেই দিনটিকে আমরা হাসি ঠাট্টার মধ্যে কাটাই । সেদিনের স্পেনের মুসলমানদের করুন আর্তনাদ কি আমাদের কানে ঝংকারিত হয়না ? আমাদের বোধশক্তি কি চিরতরের জন্য ঘুমিয়ে পড়েছে ? আমাদের আবেগ, অনুভূতি কি ভোঁতা হয়ে পড়েছে ? আসুন, পহেলা এপ্রিলসহ অন্যান্য বিজাতীয় সংস্কৃতিকে ত্যাগ করে ইসলামের সংস্কৃতি এবং দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা করি । এ চর্চা আমাদেরকে বিশ্বের বুকে তারিক বিন যিয়াদের উত্তরসূরী হিসেবে উপস্থাপন করবে । আর এ পরিচয় সর্ব যুগেই সম্মানের হবে । আজ থেকে যেন আমাদের বৌদ্ধিক চেতনা জাগ্রত হয় । 

ফিরে এসো


---আবিদ আল আহসান

গভীর রাতে পড়লো মনে তোমার কথা
হৃদয় কোনে ছড়িয়ে গেল বিষন্নতা
বন্ধ হলো সব কোলাহল নিরব ভুমি
সেই যে কবে চলে গেছ, কোথায় তুমি?

নেই তুমি তাই আঁধার আজি সন্ধ্যা রাতে
কাঁদি আমি, সবাই কাঁদে আমার সাথে
আকাশ পানে চেয়ে দেখি আকাশ কাঁদে
পাহাড়-সাগর কাঁদে সবাই, তুমি বাদে।

বিষন্ন মন কেমন যেন একলা লাগে
মনের মাঝে হঠাৎ কেমন ব্যথা জাগে
মনের ব্যথা মনের মাঝেই চেপে রাখি
তুমি ফিরে আসবে বলে আশায় থাকি।

আশা আমার হয় নিরাশা পাইনা তবু
তোমায় ছাড়া কাউকে আমি চাইনা কভু
কোথায় তুমি ফিরে এসো আমার বুকে
জীবন সাথী করে তোমায় রাখবো সুখে।
কত আগুন জ্বলছে আমার এ বুকে ,
চোখের পানিতে ভেসে যায় হৃদয় ভাংগা দুঃখে
ছোট বেলায় কত আনন্দে খেলা করেছি ,
মায়ের কোলে মাথা রেখে সব বেদনা ভুলেছি ।
সে কথা মনে উঠলে অন্তর ফেটে যায় ,
রোদে ,ঝড় বৃষ্টি লাখতে দেয়নি 'মা' গায় ।
কখনো মাকে ফেলে দুরে চলে গেলে
দরজায় দাড়িয়ে মা তুমি ভেসেছ চোখের জলে ,
মা গো আমার চোখের পানি এখন ডাকছি তোমায়
আমায় ফেলে তুমি রয়েছ কোথায়

কষ্ট

২৯ মার্চ, ২০১৫

বন্ধু


---------- রাব্বি আহমেদ
অজানা কোনপথে
লুঁকিয়ে আমায় খোঁজ
তুমি কি এখনো বন্ধু
ণীরবে আমায় ভাবো।
রাত জেগে আঁকাশ পানে
হিমেল পরশ গোনো
তুমি কি বন্ধু ণীরবে আমায় ভাবো।
মন খারাব হলে
আমার লেখা কবিতা পড়
তুমি কি এখনো বন্ধু
একাকী চাঁদের আঁলোয়
সুরের প্রদীপ জ্বালো।
তুমি কি এখনো বন্ধু
রাতের আঁধারে
নিজের অজান্তে আমায় খোঁজ
ণীরবে আমায় ভাবো।
তুমি কি এখনে বন্ধু
সাঝের প্রহর গোনো
তুমি কি এখনে বন্ধু
উদাস মনে
চেঁনা সেই পথে হাটো।
তুমি কি এখনো
আমায় খোঁজ।


তোমাকে উদ্দেশ্য করে কোনদিন লিখেছি কিনা আজ আর মনে করে বলতে পারিনা। মনে করতে পারিনা তোমার জন্যে কতগুলো শব্দকে মস্তিষ্ক থেকে কাগজে স্থানান্তর করেছি। তাতে কি হয়েছে? তোমার উপর আমার আজন্ম অধিকার, আজ লিখব! নিঃশ্বাস কোন মুহূর্তে নেওয়া শুরু করেছি, তাও তো মনে নেই আমার... শ্বাস নেওয়া তো থামিয়ে দেইনি।
তুমি জেনে থাকবে, কোন মুহূর্তে প্রথম প্রান বায়ুটি নিজেতে নিয়েছিলাম। তুমি জেনে থাকবে, আমি প্রথম কখন কেঁদেছি, কিভাবে। এই পৃথিবীতে সবথেকে প্রথম তুমি আমায় ভালবেসেছ । আমি যখন সবুজ দেখিনি, অবুঝ কাঁদিনি, তারও আগে থেকে লালন করেছ মমতা, আমার তরে।
শত-কোটিবার তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, এটা কোথায়, ওটা কোথায় ... তুমি অক্লান্ত উত্তর দিয়ে গেছ ... বিনা প্রতিবাদে। আমার প্রতিটি জিনিষের এনসাইক্লোপিডিয়া যেন তুমি! আমার পছন্দের জিন্সটি কবে আমার লাগবে আমার তা জানা নেই, তুমি কিভাবে যেন ঠিকই জান। তুমি হচ্ছ সেই মানুষ, যে আমার থেকেও আমাকে বেশী চেনে। আমার মন খারাপ দেখে তোমাকে দুঃখ পেতে দেখেছি... আমাকে রেগে থাকতে দেখে তোমাকে কাঁদতে দেখেছি। আমার অসুখে-বিসুখে তোমাকে পাশে পেয়েছি..... ঘণ্টার পরে ঘণ্টা যখন আমার অসুস্থ আমার জন্যে ব্যয় করেছ, আমি কৃতজ্ঞ কেঁদে চোখের পানি লুকিয়েছি কতবার সে হয়ত শুধু সৃষ্টিকর্তা জানেন।
তোমার শাসনের প্রতিটি শব্দ যে কতটা মুল্যবান আজ বুঝতে পারি কিছুটা... প্রতিটি শব্দ ছিল আমার কল্যানে। আমার ভালোর জন্যে। সব সব সব আমার! তোমার কি মা? আমিও কি তোমার হতে পারলাম বল? নিয়মের নিষ্ঠুরটায় তোমার বাঁধন ছিঁড়ে এসে পড়েছি দেখ।
কত বেশি ভালবেসেছ মা? আমি তো তোমায় এতো ভালবাসতে পারিনি! তোমার অসুখে সেবা করিনি রাত জেগে, কষ্ট দিয়েছি, অনেক অনেক কষ্ট দিয়েছি। সব সময় নিজেকে নিয়ে থেকেছি, তোমায় ছেড়ে একা থেকেছি... আজও তোমায় ছেড়ে এতো দূরে চলে এসেছি, তোমাকে একা করে দিয়ে। অপরাধী লাগে, যখন তোমার এতো এতো কিছু দেবার বিনিময়ে কিছুই দিতে না পারার যন্ত্রণা এসে ঘিরে ধরে। যে মুখটা তোমার দেখতে ইচ্ছে করে, সেই তোমার সন্তানের সময় হয়ে ওঠে না তা দেখানোর।
তুমি হলে সে, যার ক্ষেত্রে আমি চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি, হ্যাঁ, তুমি আমাকে ভালবাস, নিঃস্বার্থ ভাবে, আমৃত্যু... এই বিশাল এক পৃথিবীতে, তুমি সেই একজন, আমার প্রতি যার ভালবাসায় এতটুকুও খাদ নেই...... তোমাকেও কি অতটা ভালবাসতে পেরেছি মা? সত্যি জানিনা, তবে জানো, আমিও তোমাকে অনেক ভালবাসি। মিথ্যে বলিনি মা, আমি জানি আমি মিথ্যে বললে তুমি বুঝতে পারো।
তুমি আমার প্রথম কান্না শুনেছ মা... দেখছ, অনুভব করেছ প্রথম অশ্রুকণা। আমি আজও কাঁদছি, তোমাকে মনে করে। তোমাকে অনেক মিস করছি মা।
তোমাকে কোনোদিন বলা হয়নি কতটা ভালবাসি, জানিনা, হয়ত বলা হবেওনা... তবে আমার ধারণা তুমি জানো...... তুমি যে আমার সবকিছুই জানো।
ভাল থেক মা...... তোমার সন্তান বলছি.....

২৮ মার্চ, ২০১৫

Amadir    Dhaka.....


লাঞ্ছিত জাতি


মুক্তিযোদ্ধা সে যে আমার জাতির শ্রেষ্ঠ ধন।
তার গায়ে মারতে লাথি কাঁপেনি ওদের মন
একাত্তরের ঘাতক তারা পাকিস্তানি দোসর ওদের বিচার হয়নি আজও।
তাই তো এতো আস্ফালন,
বীর সৈনিকের গায়ে মারল লাথি যারা
জাতির বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করেনি কী তারা ?
রাজাকারেরা মারল লাথি বীর সন্তানের বুকে,
মারল না কী লাথি তারা জাতির বিবেককে?
অভাগা জাতি হায় হোল লাঞ্ছিত !!!
প্রতিবন্ধী


সকালের ঘুমস্বপ্নে পরীদের আনাগোনা 
চারিদিকে লাল নীল আর হলুদ জামা 
আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী 
তোর দেহ রঙে 

ভোর জুড়ে পাখিদের কলকাকলি 

নদী পাড়ে পানির কুলকুল ধ্বনি 
আমি শব্দ প্রতিবন্ধী 
তোর কণ্ঠস্বরে 

চারিদিক জুড়ে নানা রঙের নারী 
নানা ঢঙের প্রেমের হাতছানি ভারী 
আমি প্রেম প্রতিবন্ধী 
তো'তে। 

২৭ মার্চ, ২০১৫

সেদিন ছিল রোদ গলে পড়া শীতভোর। সেদিন ছিল নদীর জলের ঠান্ডা ভোর। পোষের পিঠে চড়ে রোদ এসে নেমেছিল গড়চুমুকে। মৃগদাব গড়চুমুকে। আমাদের চড়ুইভাতির সকাল তখন অমৃতকমলার দেশে পাড়ি দিয়েছে। সাদাসাদা ফুলকো লুচি আর নতুন আলুর সাদা চচ্চড়ির গন্ধে মাত গড়চুমুকের নদীর ধার। আমরা একদল শহুরে গিয়ে হাজির হলাম। শীতের সব অনুষঙ্গ যেমন নলেনগুড়, কমলালেবু, মটরশুঁটি, লেপ-বালাপোষ, পশমিনা-পুলওভার নিমেষে উধাও চড়ুইভাতির আনন্দে। শুধুই  শান্তি জলের ধার। শুধুই শান্তি নীল আকাশ। নীল আকাশ গিয়ে চুমু খেয়ে নিল দামোদরের পাড়কে।  নদের জল উছলে উঠল ছলাত করে। একটু ছুঁয়ে নিল নদের পাড়ের ক্যাসুরিনার নুয়ে পড়া সবুজ পাতা ভরা ডালকে। এখানেও সেই পোষমাস। যা এসেছে আমাদের শহরেও। এখানেও সেই শীত যা আছে আমাদেরো। এখানেও পারদ নামে প্রতিবারের মত। শীত আসে, শীত যায়। চড়ুইভাতি ফুরিয়ে যায়। আমরাও পরিযায়ীর মত ঘরে ফিরে যাই । শীতঘুমিয়ে ফুরিয়ে যায় শীত। 
একলা আমি
#####$$$######
জানিস এখন একা একা পরে থাকি সব সময় । আমি সুখি না থাকি কিন্তু যাতে কেউ কখন ও আমাকে দুঃখ না দিতে পারে । আমাকে দেখলে কেউ বুঝবেও না আমার মাঝে কত দুঃখ লুকিয়ে । কেউ বুঝবে না আমার ঐ বোকা বোকা হাসিটার পিছনে কত কান্না জমা আছে । সারা দিন আমার এখন তদের সাথে হেসে খেলে কেটে যায় ।